কিভাবে ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে সহজেই কার্যকরীভাবে আমার ব্যবসার মার্কেটিং করবো?

instagram_p3

কিভাবে ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে সহজেই কার্যকরীভাবে আমার ব্যবসার মার্কেটিং করবো?

বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই ফেসবুক ব্যবহার করে থাকেন। এর মাঝে শহুরে এক শ্রেণীর মানুষের কাছে কিন্তু ইন্সটাগ্রামের কদরই বেশি। বিশেষ করে একেবারে কিশোর-কিশোরী, তরুণদের নিকট ইন্সটাগ্রামের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
তাইতো ফেসবুকে একটা শক্ত অবস্থানের পাশাপাশি আপনার উচিত হবে ইন্সটাগ্রামেও আপনার ব্যবসার জন্য একটা কার্যকরী উপস্থিতি বজায়ে রাখা।
ইন্সটাগ্রামে কিভাবে নিজের ব্যবসার জন্য একটা অবস্থান তৈরি করে নেয়া যায়, সেটাই আমরা আলোচনা করবো আজ।
১। ইন্সটাগ্রামে আপনার ব্যবসার দর্শকশ্রেণি বা ক্রেতাদেরকে বুঝুন-চিনুন।
Instagram Insights এর মাধ্যমে আপনার ইন্সটাগ্রামের দর্শকশ্রেণিকে বোঝার চেষ্টা করুন যে তারা কারা এবং তারা কি পছন্দ করেন। Instagram Insights এর মাধ্যমে আপনি আপনার ইন্সটাগ্রামে বিজনেস একাউন্টের বিভিন্ন মেট্রিক্স জানতে পারবেন – এইগুলো নিয়ে ঘাটুন, পর্যালোচনা করুন। এখান থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনি পাবেন।
আপনার ব্যবসার দর্শকশ্রেণি বা ক্রেতাদের কথা শুনুন, তারা ইন্সটাগ্রামে কোথায় থাকছেন ও কি ধরণের কনটেন্ট এর সাথে এঙ্গেইজ হচ্ছেন – এইগুলো জানার চেষ্টা করুন। আপনার কনটেন্টগুলোও একই পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি করুন।
২। আপনার দর্শকশ্রেণির সাথে কথা বলুন, তাদের দিকে নয়।
আপনার ইন্সটাগ্রামের কনটেন্ট এ যারা কমেন্ট করছেন, তাদের কমেন্টের রিপ্লাই দিন। তারা যদি আপনার ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে তাদের নিজেদের ছবি দেন, তবে সেই ছবি তাদের অনুমতি সাপেক্ষে শেয়ার দিন। তাদের সাথে কথা বলুন, এঙ্গেইজমেন্ট করুন।
ছোট ছোট সাপ্তাহিক বা মাসিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তাদেরকে এঙ্গেইজ করুন, আপনার ব্র্যান্ড বা প্রোডাক্ট সম্পর্কে কথা বলতে তাদেরকে বিভিন্ন উপায়ে উৎসাহিত করুন।
৩। প্রয়োজনীয় হাশট্যাগ সীমিত আকারে ব্যবহার করুন।
হাশট্যাগসমূহ ইন্সটাগ্রামের বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। হাশট্যাগ এর মাধ্যমে মানুষ সহজেই আপনার কনটেন্ট খুঁজে পাবে। তবে খুব বেশি হাশট্যাগ ব্যবহার করা উচিত নয় এবং হাশট্যাগ দিয়ে স্পামিংও করা উচিত নয়।
আপনি চাইলে আপনার ব্র্যান্ড বা ব্যবসার জন্য নির্দিষ্ট ১/২ টি হাশট্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। এগুলোকে “ব্রান্ডেড হাশট্যাগ” বলা হয়। ব্রান্ডেড হাশট্যাগ শুধুমাত্র সেই ব্র্যান্ডেরই হয় যারা শুরু থেকে এর প্রচলন করেছে এবং ব্যবহার করে আসছে।
৪। ভালো একটা সময়ে আপনার কনটেন্ট পোস্ট করুন।
দিনের অনির্দিষ্ট সময়ে কনটেন্ট পাবলিশ করলে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত ফলাফল ও এঙ্গেইজমেন্ট নাও পেতে পারেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টা – এই সময়ে পাবলিশ করলে, আপনি অপেক্ষাকৃত ভালো ফলাফল পেতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনাকে Instagram Insights এর ডেটা দেখতে হবে এবং কিছু এক্সপেরিমেন্টও করতে হবে। আরো খেয়াল রাখতে হবে যে কোন সময়ে কনটেন্ট পাবলিশ করলে আপনি ভালো ফলাফল পাচ্ছেন।
৫। ইন্সটাগ্রামের জন্য সুন্দর গ্রাফিক্যাল ইমেজ বা ভিজুয়াল ব্যবহার করুন।
ইন্সটাগ্রাম মূলত কোটি কোটি ছবির একটি ডিজিটাল এ্যালবামের মত কাজ করে। তাই আপনার উচিত হবে যতটা সুন্দরভাবে পারা যায়, আপনার ব্যবসার পণ্য বা সার্ভিসের ছবি উপস্থাপন করা।,ছবির পিছনে হয়তো হাজার লাখ টাকার ইনভেস্টমেন্ট সম্ভব নয়, কিন্তু ছোট খাট বিষয়গুলো খেয়াল করলে অল্পের মাঝে ভালো ও সুন্দর গ্রাফিক্যাল ইমেজ বা ভিজুয়াল আপনি তৈরি করতে পারবেন।
বিশেষ করে আপনার ভোক্তা ও ক্রেতাশ্রেণীর দিকে খেয়াল রাখুন যে তারা কোন ধরণের ছবির প্রতি বেশি এঙ্গেইজ হচ্ছেন।
৬। ইন্সটাগ্রাম পোস্ট এর শেষে কল-টু-একশন (CTA) দিতে হবে।
আপনার ইন্সটাগ্রাম পোস্ট এর শেষে আপনি মানুষের কাছে কি চাচ্ছেন তা তাদের কে বলে দিতে হবে – একেই সংক্ষেপে কল-টু-একশন (CTA) বলে। হতে পারে আপনি চান, তারা আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করুক – সেক্ষেত্রে অনেকে লিখে দেন “Link in bio”।
অথবা আপনি তাদের কে আপনার পোস্টে কমেন্ট করে তাদের নিজেদের মতামত জানাতে বলতে পারেন। অথবা তাদেরকে আপনার ইন্সটাগ্রাম পোস্ট এর মাধ্যমে কোন ডিসকাউন্ট কোড দিতে পারেন। তাহলে আপনি বুঝবেন আপনার ইন্সটাগ্রাম এর মাধ্যমে কি পরিমাণ ক্রেতা আপনার সাইটে কেনাকাটা করছেন।
৭। কনটেন্ট এর মাধ্যমে একটা গল্প বলার চেষ্টা করুন।
আপনার ইমেজগুলো এমন ভাবে সাজান যেন তা একসাথে একটা গল্প বলতে সমর্থ হয়। ইন্সটাগ্রামের স্টোরিস ফিচার দিয়ে এটি করা যাবে। একটু অন্যরকম ভাবে যদি এই ব্যাপারটা গল্প আকারে ফুটিয়ে তোলা যায়, তাহলে আপনার ব্র্যান্ডটি আপনার ভক্তকুলের কাছে অন্যরকম একটি গ্রহণযোগ্যতা পাবে। আপনার ব্র্যান্ড এর মানবীয় দিকগুলো এই গল্পসমূহের মাধ্যমে সহজেই ফুটে উঠবে।
৮। ইন্সটাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সারদের সাথে কাজ করা যেতে পারে।
অনেক ব্যক্তিই ইন্সটাগ্রামে ভালো ভালো এঙ্গেইজিং কনটেন্ট তৈরির মাধ্যমে তাদের অডিয়েন্স তৈরি করেছেন এবং সেই অডিয়েন্সের কাছে তাদের বেশ ভালো গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। আপনার পণ্য বা সেবার কোন দিক যদি এই ইনফ্লুয়েন্সারদের কেউ কেউ তাদের নিজের ইন্সটাগ্রামের ছবিতে দেন, তাহলে তাদের অডিয়েন্সের কাছে আপনার ব্যবসার পরিচিতি পাবার একটা বড় সুযোগ রয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে এই সকল ইনফ্লুয়েন্সারকে আপনার কিছু হলেও সম্মানী দেয়া লাগতে পারে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *